রবিবার, ১৬ জুন, ২০১৩

রাজশাহীতে বোমা ফাটিয়ে উদযাপন শিবিরের

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের বিজয় হাতবোমা ফাঁটিয়ে উদযাপন করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির।
বুলবুলের জয় নিশ্চিত হওয়ার পর শনিবার রাত সোয়া ১টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিবিরকর্মীরা ‘আনন্দ মিছিল’ বের করে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আবু হুসাইন বিপু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বঙ্গবন্ধু হলের সামনে থেকে শতাধিক শিবির ক্যাডার আনন্দ মিছিল বের করে। এসময় তারা পাঁচটি হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় এবং বেশ কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তারিকুল হাসান মিলন রাত দেড়টার দিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।”
তবে আনন্দ মিছিল হওয়ার কথা জানালেও বোমা ফাটানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি পুলিশ।
মতিহার থানার ওসি অসিত কুমার ঘোষ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ক্যাম্পাসে শিবিরকর্মীরা ‘আনন্দ মিছিল’ করেছে বলে আমি শুনেছি। তবে বোমা বিস্ফোরণ বা গুলির ঘটনার বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই।”
বঙ্গবন্ধু হলের এক শিক্ষার্থী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, শিবিরের মিছিলের পেছনে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকেও তিনি দেখেছেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদ শেষের দিকে হওয়া ইতিমধ্যেই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন হলে অবস্থান নিতে শুরু করেছে শিবির কর্মীরা।
মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন ধরেও ক্যাম্পাসে অবস্থান ছিল শিবিরকর্মীদের।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবির সভাপতি আশরাফুল আলম ইমন রাত ২টা ৫৬ মিনিটে তার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “আলহামদুলিল্লাহ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের বিজয় মিছিল আজ রাত ১টায় অনুষ্ঠিত হলো।

“শহীদ মিনার থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে শেরে-বাংলা হলের সামনে দিয়ে মুজিব হল-এস এম হল- আমির আলি হল-লতিফ হল-জোহা হল- সোহরাওয়ার্দী হল-মাদার বক্স হল-জিয়া হল- হবিবুর হল হয়ে চারুকলায় এসে শেষ হল।

“প্রায় ৪ বছর পর পুলিশ মিছিলের পিছনে গাড়ি নিয়ে পাহাড়া দিয়ে সুন্দরভাবে মিছিল শেষ করতে সহযোগিতা করল। হায় রে পুলিশ রং বদলাতে সময় লাগে না শুধু ক্ষমতা লাগে।”রাসিক নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিন গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে হাতে শিবিরকর্মীরা প্রকাশ্যে বুলবুলের পক্ষে প্রচারপত্রও বিলি করে।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক জামায়াতে ইসলামী।

স্বাধীনতাবিরোধী এই দলটির ছাত্র সংগঠন হচ্ছে শিবির, যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিরোধী রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের হাত-পায়ের রগ কাটার অভিযোগ রয়েছে।
৪৭ হাজার ৩২২ ভোটের ব্যবধানে সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে পরাজিত করে বুলবুল বিজয়ী হয়েছেন।
 

 

সোমবার, ১০ জুন, ২০১৩

শাহবাগে বোমা হামলার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় মশাল মিছিল

হরতালবিরোধী মিছিলের পরপরই শাহবাগে বোমা হামলার প্রতিবাদে সোমবার সন্ধ্যায় মশাল মিছিল করবে গণজাগরণ মঞ্চ।
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার এক বিবৃতিতে বলেন, “গণজাগরণ মঞ্চের অহিংস আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে প্রজন্ম চত্বরে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে জামায়াত-শিবিরের হায়েনাচক্র। এর প্রতিবাদে সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রজন্ম চত্বরে প্রতিবাদী মশাল মিছিলের ডাক দেয়া হয়েছে।”
জাগরণ মঞ্চের ছয় দফা দাবিকে সামনে রেখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলিয়ান প্রতিটি মানুষকে এই মিছিলে যোগ দেয়ার আহবান জানান তিনি।
আদালত অবমাননার দায়ে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিন নেতাকে সাজা দেয়ায় প্রতিবাদে সোমবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামী।
এই হরতাল প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্যানার ও জাতীয় পতাকা নিয়ে শাহবাগ থেকে জাগরণ মঞ্চের মিছিল শুরু হয়। টিএসসি ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে আবার শাহবাগেই শেষ হয় এই মিছিল।
মিছিল শেষ হওয়ার পরপরই টিএসসির দিক থেকে একটি মোটরসাইকেলে আসা দুই যুবক শাহবাগে জাতীয় যাদুঘরের উল্টোদিকের রাস্তায় ককটেল ফাটিয়ে দ্রুত কাঁটাবনের দিকে চলে যায়।
যেখানে হাতবোমা দুটি বিস্ফোরিত হয়েছে, ওই স্থানটিতে কিছুদিন আগেও প্রজন্ম চত্বরের ছাত্র-জনতার আন্দোলন মঞ্চ ছিল। যুদ্ধাপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ও জামায়াত নিষিদ্ধের দাবিতে গত ফেব্রুয়ারি থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন জাগরণ মঞ্চের এই আন্দোলনকর্মীরা।   
শাহবাগ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, কারা শাহবাগে হাতবোমা ফাটিয়েছে তা খতিয়ে দেখছেন তারা।
বিস্ফোরণের পরপরই ওই এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়। মোটরসাইকেল ও সিএনজি অটোরিকশায় তল্লাশি শুরু করে পুলিশ।   
 

 

রবিবার, ৯ জুন, ২০১৩

হরতাল প্রত্যাখ্যান গণজাগরণ মঞ্চের

জামায়াত-শিবিরের সোমবারের হরতাল প্রত্যাখ্যান করেছে গণজাগরণ মঞ্চ। এদিন সকাল ১১টায় হরতাল বিরোধী মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছে তারা।রোববার সন্ধ্যায় গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার এক লিখিত বিবৃতিতে হরতাল প্রত্যাখ্যান ও হরতালবিরোধী মিছিলের ঘোষণা দেন।বিবৃতিতে বলেন, সকাল ১১টায় শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর থেকে শুরু হবে হরতাল বিরোধী মিছিল। একই সময়ে দেশের সকল গণজাগরণ মঞ্চে হরতালবিরোধী মিছিল পালিত হবে।এসব কর্মসূচীতে সকলকে অংশ নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন ইমরান।তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধী ও অগণতান্ত্রিক শক্তি জামায়াত-শিবির চক্র দেশব্যাপী তাণ্ডব, সংঘর্ষ ও সাম্প্রদায়িক আক্রমণের মাধ্যমে দেশকে এক আতংকের জনপদে রূপান্তর করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ১০ জুন সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা অবৈধ ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী হরতাল ডেকেছে।হরতাল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। কিন্তু অগণতান্ত্রিক-দেশবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন জামায়াত-শিবিরের এই দেশে হরতাল পালনের কোনো নৈতিক অধিকার নেই।

 

হেফাজতি তাণ্ডবের ক্ষত সারতে ৩ কোটি টাকা

জাতীয় সংসদে রোববার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সাধনা হালদারের এক প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এই তথ্য জানান।
১৩ দফা দাবিতে গত ৫ মে ঢাকা অবরোধের পর বিকালে মতিঝিলে শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয় হেফাজতকর্মীরা। ভোররাতে তাদের সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তুলে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
তবে তুলে দেয়ার আগে ৫ মে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত মতিঝিল থেকে পল্টন পর্যন্ত এলাকায় চলে হেফাজতকর্মীদের তাণ্ডব। বহু দোকান, গাড়ি পুড়িয়ে দেয় তারা, কেটে ফেলে সড়ক দ্বীপের গাছগুলো, উপড়ে ফেলে সড়ক বিভাজক। 
সৈয়দ আশরাফ জানান, বিজয় নগর, পল্টন, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় ছোট, বড় ও মাঝারি ১ হাজার ২৫৫টি গাছ কাটা হয়েছিল সেদিন।
এছাড়া ৩ হাজার মিটার ফুটপাত, ২ হাজার ৮০০ মিটার কার্বস্টোন, ১ হাজার ৫৫ বর্গমিটার গ্রিল, ২ হাজার ৪৩৯ বর্গমিটার কাঁটাতারের বেড়া, ৩ হাজার ৫৪০ বর্গমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানানো হয়।
মন্ত্রী আরো জানান, আটটি ট্রাফিক সিগন্যাল এবং বৈদ্যুতিক স্থাপনার ক্ষতিসাধন করে হেফাজতকর্মীরা।
মেরামত ও পুনর্স্থাপন জরুরি ভিত্তিতে করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এই ৩ কোটি ৩৩ লাখ ৭ হাজার টাকা ব্যয় করছে।
নওগাঁ-৫ আসনের মো. আব্দুল মালেকের এক প্রশ্নের জবাবে আশরাফুল ইসলাম জানান, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯৩ লাখ সমবায় সমিতির আওতাভুক্ত।
কয়েকটি পাল্টিপারপাস সোসাইটির বিরুদ্ধে অবৈধ কার্যক্রমের অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, এজন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া নতুন করে কোনো মাল্টিপারপাস কোঅপারেটিভ সোসাইটিকে নিবন্ধন দেয়া যাবে না বলে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।